রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০

কর্মচঞ্চলতায় মুখরিত রাজশাহী বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক


প্রকাশিত:
৩০ জুলাই ২০২২ ২৩:৫৪

আপডেট:
৩০ জুলাই ২০২২ ২৩:৫৪

ফাইল ছবি

পুরো কাজ এখনও শেষ করা হয়নি। এরইমধ্যে তরুণ-তরুণীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে রাজশাহীর এই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কটি। বর্তমানে ১৭টি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন প্রায় ৪০০ তরুণ-তরুণী। পুরো কাজ শেষ হলে এখানে প্রায় ১৪ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

ইতোমধ্যে এখানে শুরু হয়েছে বিশ্বের নামীদামী সাইট রক্ষণাবেক্ষণের কাজ। এছাড়া সফটওয়্যার ডেভেলপ, বাইরের দেশের চাহিদামতো ফাইল নিয়ে কাজ করাসহ বিভিন্ন কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আর তাই পুরোপুরি কাজ শেষ না হলেও কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে রাজশাহীর এই পার্কটি।

রাজশাজী বিভাগের ফ্রিল্যান্সার ও আইসিটি খাতে জড়িত শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়ছে আশার আলো। খুলছে সম্ভাবনার দুয়ারও। তারা মনে করছেন, তরুণ প্রজন্ম তাদের মেধার যথাযথ বিকাশ ঘটিয়ে কর্মসংস্থানের জন্য নিজেকে তৈরি করতে পারবে। এর পাশাপাশি অন্যদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে।

এখানে কর্মরত কর্মীদের সাথে কথা জানা গেছে, তারা ভাবতেন- যে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে ভাল একটা ক্যারিয়ার গড়তে হলে হয় ঢাকায় যেতে হবে, না হয় ক্যারিয়ারই হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইবোনদের দেখেছি ক্যারিয়ারের জন্য ঢাকায় চলে যেতে। কিন্তু এখানে ক্যারিয়ার গড়ার তারা সুযোগ পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন।

বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক স্থাপনের জন্য রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা সংসদে একাধিকবার দাবির ফলে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এই প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই রাজশাহী মহানগরী বুলনপুর এলাকায় ৩১ দশমিক ৬৩ একর জমির ওপর ২৮১ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে হাইটেক পার্কটির নির্মাণকাজ শুরু হয়।

পার্কের প্রধান দুই অংশের মধ্যে শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন এ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের কাজ শেষ হয়েছে গত বছর।এখানেই ১০টি প্রতিষ্ঠানকে স্পেস বরাদ্দ করা হয় তাদের কাজ শুরু করার জন্য। এরপর জয় সিলিকন টাওয়ারেও স্পেস বরাদ্দ শুরু হয়েছে। সেখানে ৭টি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে স্পেস বরাদ্দ পেয়েছে। সব মিলিয়ে কাজ শুরু করছে ১৭টি প্রতিষ্ঠান।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হাইটেক পার্কের শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার অফিস পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে স্থান বরাদ্দ পেয়েছে ১০টি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। এদের মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। কাজ করছেন প্রায় দুই শতাধিক কর্মী।

রাজশাহী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কের উপপরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুল করিম বলেন, রাজশাহী হাইটেক পার্কের দুটি ভাগ আছে। জয় সিলিকন টাওয়ার ও শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এ্যান্ড ইনকিউবেশন ভবন। এই দুই ভবনের মধ্য জয় সিলিকন টাওয়ারের কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে ৯টি প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ করছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে এখানে। তারা কাজ শুরু করেছে। হাইটেক পার্কের পুরো নির্মাণকাজ শেষ হলে অন্তত ১৪ হাজার তরুণ-তরুণী এখানে কাজ করবে।’

‘এমডি ইনফোটেক’ নামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুঞ্জুরুল মুর্শেদ বলেন, ‘আমরা আবেদন করেছিলাম। পরিপ্রেক্ষিতে জয় সিলিকন টাওয়ার ও শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এ্যান্ড ইনকিউবেশন ভবনে আমাদের স্পেস বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মঞ্জুরুল মোরশেদ বলেন, দেশের বেকার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এমডি ইনফোটেক চলতি বছর ১৫ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। একইসঙ্গে পরিবেশ সুরক্ষায় আইটি সহায়ক উদ্ভাবনী নিয়ে কাজ করছি আমরা। এরইমধ্যে আমাদের উদ্ভাবনী পণ্য বিশ্বখ্যাত বিপণন প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টে রফতানি হচ্ছে। সরকারের ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন এবং উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছাতে আমরা কাজ করব।’

তিনি আরও বলেন, গেল ৪ বছরে এই প্রতিষ্ঠানটি ৬০০-এর বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। ভবিষ্যত উদ্ভাবন করতে সহায়তা করি এই স্লোগানকে ধারণ করে বিশেষত তরুণদের ভবিষ্যত নির্মাণকে নিশ্চিত করার প্রত্যয়ে কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, আইটি সল্যুউশন, ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট, কন্টেন্ট তৈরি, প্রাইভেট লেবেল প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিং, এসএম ব্র্যান্ডিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ করছে।

রাজশাহী হাইটেক পার্কে মোবাইল গেমস এবং অন্যান্য সফটওয়্যারসেবা দিতে আরেক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে ‘টেক রাজশাহী’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাহফুজুর রহমান। তিনি জানান, তার প্রতিষ্ঠানে এখন ১৪২ কর্মী আছে। এর মধ্যে হাইটেক পার্কে ২৮ জন কাজ করছেন।হাইটেক পার্কটির অবস্থান এবং অন্যান্য আধুনিক সুবিধার পাশাপাশি এখানে একটি অফিস থাকা মানে প্রতিষ্ঠানের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ অনেকখানি বেড়ে যাওয়া।

শীর্ষ দুটি ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস এ্যামাজন ও ওয়ালমার্টের স্টোর পরিচালনা প্রতিষ্ঠানটির সেবাগুলোর অন্যতম। এছাড়াও রোবোটিক্স টেকনোলজি, এআই সমাধান এবং পরিষেবা নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।


আরপি/ এমএএইচ-১৩



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top