রাজশাহী বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১

‘সহজ অ্যাপে’ টিকিট পাওয়া কঠিন


প্রকাশিত:
২৪ এপ্রিল ২০২২ ১৮:৫২

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৩:৫৭

ফাইল ছবি

দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের সুফল পেতে শুরু করেছে জনগণ। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে সরকার। দেশের সকল খাতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও ভিন্ন চিত্র রেলওয়ে খাতে। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ খাতে একের পর এক অসহনীয় ভোগান্তিতে অতিষ্ট রেল যাত্রীরা। সম্প্রতি হয়রানি কমাতে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস) এর পরিবর্তে সহজ অ্যাপে স্থানান্তর করা হয় ই-টিকেট কার্যক্রম।

তবুও কমছে না ভোগান্তি। সহজের কার্যক্রম শুরু থেকেই কাটছে না বিতর্ক। একের পর এক বিতর্কে প্রশ্নবিদ্ধ পুরো সিস্টেম। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদ যাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে ঈদের আগ মুহূর্তেই চালু করা হয় সহজ অ্যাপে কার্যক্রম। কিন্তু একের পর এক সার্ভার জটিলতা চরম বিপাকে পড়েছেন ই-টিকিটের গ্রাহকরা। নাম মাত্রেও লাভবান হচ্ছেন না বলে দাবি যাত্রীদের।

জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি। অনলাইন ও অফলাইন দুই মাধ্যমেই নির্দিষ্ট সময়ে টিকিট বিক্রির সূচি থাকলেও দুর্ভোগ পোহাতে হয় অনলাইন টিকিট গ্রহীতাদের। সকাল ৯টা পর্যন্ত চেষ্টা করেও লগইন করতে পারে নি একাধিক টিকিট গ্রহীতা।

আবার লগইন করতে পারলেও টাকা পেমেন্টের দুর্ভোগও ছিল সীমাহীন। পেমেন্ট সিস্টেমে রকেট, নগদ, ট্যাপ অপশন না থাকায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন অনেকেই। আবার বিকাশে পেমেন্টের ক্ষেত্রেও সার্ভার জটিলতায় এ সমস্যা ছিল চরমে।

শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থী নাজমুল হক। রাজশাহী-চিলাহাটি রুটে ভ্রমণের জন্য টিকিট সংগ্রহকারী এ শিক্ষার্থী নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার সকাল ৮টার আগে থেকেই টিকিট সংগ্রহের প্রস্তুতি নেই। কিন্তু সকাল সাড়ে ৮টা পেরোলেও লগইন করতে পারছিলাম না। বার বার রিফ্রেশ দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছিলো না। অনবরত চেষ্টার পর সকাল ৯টার একটু আগে লগইন করতে পারি।

তিনি আরও বলেন, ৯টার দিকে সফলভাবে লগইন করার সাথে সাথেই টিকিট চেক করে দেখি মাত্র ২৫ টা অবিক্রিত রয়েছে। অত:পর সকল কার্যক্রম শেষে টিকিট কনফার্ম হতে সময় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ টা ২০ এ। আগের থেকে নতুন মাধ্যমে টিকিট কাটতে অনেক বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সিএনএস পদ্ধতিতে কখনো এমন ভোগান্তির স্বীকার হতে হয় নি, নতুন সিস্টেম পুরাই হ-য-ব-র-ল অবস্থা বলেও জানান তিনি।

এছাড়াও গত শুক্রবার টিকিট কাটতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয় আরেক টিকিট সংগ্রহকারী খায়রুন্নেসা খেয়াকে। তিনি জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৮টার একটু আগে থেকে লগইন করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ৮টার আগে লগইনই করতে পারেন নি। লগইন করে প্রাথমিক কার্যক্রম সেরে টিকিট সিলেকশনে গিয়েই বাঁধে তৈরি হয় জটিলতা। একাধিক বার চেষ্টা করেও দুইটি টিকিট সিলেক্ট করতে পারেন তিনি। পরে একটা একটা করে টিকিট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

সেই মোতাবেক একটা টিকিট সংগ্রহ করে আরেকটা টিকিট কাটতে গিয়ে শুরু হয় নতুন ঝামেলা। সার্ভার জটিলতায় শেষ পর্যন্ত ঢুকতেই পারেন নি সহজের সাইটে। কিছুক্ষণ পর সাইটে ঢুকতে পারলেও টিকিট সিলেকশন করতে পারেন নি তিনি। মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায় কাঙ্খিত দিনের টিকিট।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহা-ব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, কিছু অভিযোগ ছিল কিন্তু বিক্রি তো ঠিক মতোই হলো। শনিবার দুপুর একটার মধ্যেই ২৭ তারিখের কাউন্টারের সকল টিকিট বিক্রি হয়েছে।

সার্ভার জটিলতার বিষয় স্বীকার করে তিনি বলেন, সকাল থেকেই সার্ভার কিছুটা স্লো ছিল। এবারের কার্যক্রমে এনআইডি নম্বর সংগ্রহের কারণে কিছুটা দেরি হচ্ছে। সহজ অ্যাপের সকল কার্যক্রম ঢাকা থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। ঢাকায় কাজ অব্যাহত রয়েছে। ২৪ ঘণ্টাই কারিগরি টিম সেখানে কাজ করছে। শীঘ্রই সংকট কাটবে বলে আশাবাদীও এই কর্মকর্তা।

 

 

 

আরপি/এসআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top