রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১

ট্রেন থামা ছাড়া কোনো কার্যক্রমই নেই স্টেশনে


প্রকাশিত:
৯ অক্টোবর ২০২১ ০৪:৪৪

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:৩৩

ছবি: নন্দনগাছী রেলস্টেশন

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনের কার্যক্রম দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। স্টেশনটিতে ট্রেন থামলেও লোকবলের অভাবে টিকিট বিক্রিসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে একদিকে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে। অন্যদিকে লোকবল না থাকায় স্টেশনের সম্পদ চুরি হয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, ১৯২৯ সালে উপজেলার নন্দনগাছী স্টেশনটি স্থাপিত হয় নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর এলাকায় যা নন্দনগাছী স্টেশন নামে পরিচিত। ৯০ বছর আগে স্থাপিত স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০১৬ সালের শেষের দিকে। নিয়ম অনুযায়ী এই স্টেশনে স্টেশন মাস্টার, টিকিট মাস্টার, পোর্টারম্যান, কয়েন্সম্যান, গেটম্যানসহ প্রায় ১২ জন জনবল ছিল। কিন্তু বর্তমানে শুধুমাত্র পোর্টারম্যান পদে একজন কর্মরত আছেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ধান ও পাট শুকাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। স্টেশনটিতে একটিমাত্র টয়লেট থাকলেও নেই কোনো পানি সরবরাহের ব্যবস্থা। লোকজনের বসবাস না থাকায় আবাসিক ভবন ময়লা-আবর্জনা ও আগাছায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে আশপাশের এলাকা। স্থানীয় মানুষের মলমূত্র ত্যাগের স্থানে পরিণত হয়েছে স্টেশনের বিভিন্ন স্থাপনা।

স্থানীয়রা জানান, রাত হলেই ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে স্টেশনে। অপরাধীরা এসে আশ্রয় নেয় সেখানে। অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে স্টেশনের গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামাদি। চুরি হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন মালামাল।

রেলওয়ে বিভাগ জানায়, এই রুটে চলাচলকারী তিনটি ট্রেন এ স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে। টিকিট মাস্টার না থাকায় যাত্রীরা এখান থেকে কোনো টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন না। এ স্টেশন থেকে ট্রেন ভ্রমণ করতে গেলে টিকিট আনতে হয় ১০ কিলোমিটার দূরের সরদহ অথবা ১২ কিলোমিটার দূরের আড়ানী স্টেশন থেকে। স্থানীয় লোকজন নিজেরা গিয়ে, কখনো যানবাহনের চালকদের মাধ্যমে টিকিট কেটে রেখে এ স্টেশন থেকে ট্রেন ভ্রমণ করছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে স্টেশনটি বন্ধ থাকায় বর্তমানে এটি মাদকসেবীদের আড্ডায় পরিণত হয়েছে। যেন দেখার কেউ নেই। টিকিট না পেয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। স্টেশনটি দ্রুত চালু করে যাত্রীদের ভোগান্তি দূর করার দাবি এলাকাবাসীর।

সুজনের (সুশাসনের জন্য নাগরিক)  চারঘাট উপজেলা সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, আবাদযোগ্য ভূমি চাষাবাদের অভাবে যেমন পরিত্যক্ত হয়ে যায়, এ স্টেশনের অবস্থাও তাই হয়েছে। মাদকসেবী আর অসামাজিক কার্যকলাপের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে স্টেশনটি। স্টেশনটি চালু হলে এ অঞ্চলের যাত্রীদের খুব উপকার হবে।

স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান জানান, এই স্টেশন পূর্ণাঙ্গভাবে চালু থাকলে এ অঞ্চলের মানুষ খুব সহজেই আন্তঃনগর ট্রেনে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে সহজে যাতায়াত করতে পারত। সন্ধ্যার পর স্টেশনটি ভুতুড়ে এলাকায় পরিণত হয়। তাই এ স্টেশন থেকে কেউ ট্রেনে ওঠা–নামা করেন না।

বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহীর চীফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (পশ্চিম) মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, জনবল সংকটের কারনে নন্দনগাছী স্টেশননের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। স্টেশন মাষ্টার নিয়োগ হলে ঐ স্টেশনের কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হবে।

 

আরপি/এসআর-০৮



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top