রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


বাইশে ফেব্রুয়ারি সব যেন শেষ হয়ে না যায়


প্রকাশিত:
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:১৭

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৩২

স্বদেশ রায়

আমাদের ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব আজো আমরা সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারিনি। এর বড় কারণ, ভাষা আন্দোলনকে আমরা একটি পার্বণে পরিণত করেছি। অর্থাৎ এটা শুধু ফেব্রুয়ারি মাসের বিষয় এবং সব কিছু শেষ হয়ে যায় একুশে ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে। কেন এমনটি হলো, বা কেন আমরা এ কাজটি বছরের পর বছর করে চলেছি সে বিষয়টি খুব বেশি ভেবে দেখি বলেও মনে হয় না। কেউ বলতে পারেন, আমাদের ভাষা আর্থিক গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছে বলেই এমন অবস্থা। আবার এমনও বলা, কোন কিছুকে সঠিক চর্চা না করে তাকে পার্বণের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া আমাদের স্বভাব। তবে প্রকৃত অর্থে যাকে শতভাগ আর্থিক গুরুত্ব হারিয়ে ফেলা বলে তা কিন্তু বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে এখনও বাংলাদেশে ঘটেনি। এই শতভাগ না হোক সর্বোচ্চ আর্থিক গুরুত্ব হারিয়ে ফেলার বিষয়টি বুঝতে হলে আমাদেরকে অন্তত ভারতের রাজ্যের পশ্চিমবঙ্গের তরুণ শ্রেণির সঙ্গে মিশতে হবে। তাদের সঙ্গে কথা বললে, তাদের সঙ্গে মিশলে বোঝা যায়, আসলে বাংলা ভাষা সেখানে কতটা কম অর্থকরী। সেখানে একটু যারা সচেতন ও সচ্ছল ঘরের ছেলে মেয়ে তাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে বাংলা তৃতীয় ভাষা। প্রথম ভাষা ইংরেজি, দ্বিতীয় ভাষা হিন্দি তারপরে বাংলার স্থান।

এর বিপরীতে অনেকে অবশ্য পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে আরেকটি সত্য তুলে আনবেন, সেখানে এখনও বাংলা ভাষার একটা শুদ্ধ চর্চার বিষয় অব্যাহত আছে আবার বাংলা বই ও পত্র পত্রিকা বিক্রির সংখ্যা আমাদের থেকে বেশি। এ কারণে অনেকেই বলবেন, বাংলার অবস্থা আমাদের থেকে তাদের ওখানে খারাপ তা সঠিক নয়। বরং তাদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বাংলা চর্চার মান দেখলে ও বাংলা বই, পত্র পত্রিকা বিক্রির হার এসব হিসেব করলে মনে হবে তারা আমাদের থেকে বাংলা চর্চায় এগিয়ে। যদিও তাদের কিছু বুদ্ধিজীবী আমাদের খুশি করার জন্যে সব সময়ই বলেন, বাংলা ভাষা চর্চায় আমরা এগিয়ে আছি। যাহোক, তাদের বিষয়টি নিয়ে যদি একটু গভীরে যাওয়া যায় তাহলে দেখা যাবে ওদের বিষয়গুলো ভিন্ন। প্রথমত ওরা যে এখনও শুদ্ধ বাংলা চর্চা করছে তার কারণ ওদের ভাষা চর্চার প্রতিষ্ঠান গুলো দীর্ঘ দিনের। বাংলা ভাষার অভিভাবকত্ব দীর্ঘদিন ধরে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পালন করে আসছে।

আমাদের ভাষা আন্দোলনের নেতারা যখন পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন, তারা কিন্তু বিষয়টি একটি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার জায়গা থেকেই করেছিলেন। সে ভালোবাসাকে মর্যাদা দেবার একটিই পথ, বাংলা চর্চা বাড়ানো, বলার জন্যে একটি প্রমিত ভাষা গড়ে তোলা। আর এর জন্যে প্রয়োজন নিষ্ঠা। একুশের বইমেলা থেকে শুরু করে মিডিয়া অবধি সবখানে নিষ্ঠার একটি ঘাটতি চোখে পড়ে। স্মরণ করা প্রয়োজন, আমাদের ভাষা আন্দোলনের নেতাদের নিষ্ঠার অভাব ছিলো না।

বানান সংস্কারসহ বাংলা ব্যাকরণের নানান দিকগুলো সংস্কার কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ই আগে এককভাবে করতো। তাছাড়া সুনীতি কুমার চট্টোপধ্যায় থেকে শুরু করে রাজশেখর বসু, সৈয়দ মুজতবা আলী প্রমুখর হাত ধরে বাংলা ভাষাকে যেভাবে পরিমার্জন করা হয়েছে সেটা কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকত্বে। ভাষা চর্চা ঘিরে যত প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানো হয়েছে সেখানে একটা সময়ে অনেক যোগ্য মানুষ অনেক বেশি অবদান যেমন রেখে গেছেন আবার একটা কাঠামোও দাঁড় করিয়ে গেছেন তারা। ওই কাঠামো এখনো ভেঙ্গে পড়েনি। অন্যদিকে ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলা একাডেমি পেলেও সে একাডেমি বাংলা ভাষার উৎকর্ষ সাধনে কাজ করেছে খুবই কম। অভিধান লেখা ও বইমেলা আয়োজনের মধ্য বাংলা একাডেমি নিজেকে ব্যস্ত রেখেছে বেশি সময়। সত্যি অর্থে ভাষা চর্চা ও ভাষার উৎকর্ষ সাধনের প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠতে পারেনি। এর পাশাপাশি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক বাংলা ভাষার উন্নয়নের জন্যে তেমন প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। তাই স্বাভাবিকই মনে হতে পারে পশ্চিমবঙ্গে আমাদের থেকে শুদ্ধ ভাষা চর্চার দিকটি এগিয়ে। বাস্তবে যদি পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে পশ্চিমবঙ্গে যে বাংলা চর্চা হতো তার সঙ্গে তাদের বর্তমানকে তুলনা করা হয় তাহলে বোঝা যাবে বিষয়টি পিছেই পড়ে যাচ্ছে দিন দিন।

অন্যদিকে আসছে বাংলা পত্রপত্রিকা বিক্রির বিষয়টি। এর মূল কারণ পশ্চিমবঙ্গে পাঠ্যাভাসের হার আমাদের থেকে বেশি। আমরা অনেক কম পড়ি। এরও অবশ্য অনেকগুলো কারণ আছে। প্রথমত আমাদের শিশু সাহিত্য অত্যন্ত দুর্বল। এ কারণে ছোট বেলায় বাচ্চারা আনন্দের জন্যে পড়ার বিষয় পায় তেমন বেশি পায় না। তাই বাচ্চাদের ছোটবেলা থেকে পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠার সুযোগ কম। অন্যদিকে শিশুসাহিত্যের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে রামায়ণ ও মহাভারত দুটি মহাকাব্যকে ধর্মীয় গ্রন্থ হিসেবে ধরে নিয়ে ছোটবেলায় বাংলায় পড়ানো হয় ( যদিও এখন এগুলো তারা ইংরেজিতে পড়ছে ও হিন্দিতে সিরিয়াল দেখছে) । বাংলাদেশে বাচ্চাদের এভাবে কোন মহাকাব্য পড়ানো হয় না, যার ভেতর দিয়ে পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠবে। ধর্মীয় বই যা বাংলাদেশে পড়ানো হয় তা মুখস্থ করানো হয় বেশি এবং বাংলাতে পড়ানো হয় না। স্বাভাবিকই আমাদের থেকে তাই পশ্চিমবঙ্গে ছোট বেলা থেকে পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে বেশি। ছোটবেলা থেকে এই পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠার কারণে পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষার বইই আমাদের থেকে অনেক বেশি বিক্রি হয়। প্রতি বছরই কোলকাতায় বই বিক্রির হিসেবে নিলে দেখা যাবে সেখানে সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশে’যত কপি বিক্রি হয় আমাদের বাংলাদেশে তা হয় না। অর্থাৎ ওই মাপের পাঠ্যাভাস এখনো আমরা গড়ে তুলতে পারেনি।

আমাদের সবগুলো দৈনিক পত্রিকা মিলে এখনও সার্কুলেশান ৫ লাখ নয়। অন্যদিকে সার্কুলেশান কমে যাবার পরেও সেখানে শুধু আনন্দবাজারের সার্কুলেশান ৭ লাখের ওপরে। তাই বলা যায় পশ্চিমবঙ্গে বাংলা খুব অর্থকরি সেজন্য এই চর্চা ও বই বিক্রি নয়, মূলত এটা অনেকটা অভ্যাস ও অবকাঠামোর কারণে। অর্থকরী বিদ্যার জন্যে এখনও সেখানে মাধ্যম ইংরেজি ও হিন্দি। চাকরির বাজারে, ব্যবসার বাজারে প্রবেশ করতে হলে ইংরেজি ও হিন্দি ছাড়া কোন গতি নেই। এর বিপরীতে আমাদের দেশে এখনও বিশাল চাকরির বাজার বাংলা মাধ্যমে চলছে। তবে ভালো চাকরি, বড় চাকরি ও বড় ব্যবসার ক্ষেত্রে এখন ইংরেজি ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। দিন দিন ইংরেজির প্রভাব বাস্তবতা হয়ে উঠেছে। আর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যম ইংরেজি হওয়াতে ইংরেজি এখন আর ওই অর্থে শুধু একটি ভাষা নেই; বাস্তবে একটি বড় টেকনোলজি (যদিও সব ভাষা একটি টেকনোলজি) । এ টেকনোলজি এখন অনেক দেশকে আয়ত্তে নিতে হচ্ছে। যেমন চায়না ইংরেজিকে এখনও ধরতে না পারার কারণে তথ্য প্রযুক্তিতে অনেক ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিতে প্রতিযোগীতায় পিছে পড়ে যাচ্ছে। চায়না এখন ইংরেজিকে ধরার চেষ্টা করছে। তবে ভারতের সঙ্গে পাল্লার ক্ষেত্রে বিষয়টি দাঁড়াচ্ছে ভারতে ইংরেজিই তাদের মূল কানেকটিভিটির যোগসূত্র। স্বাভাবিকই সকলেই মাতৃভাষার পাশাপাশি ইংরেজি শিখে থাকে।

আমাদের বাংলাদেশে আমরা ইংরেজি শেখার ক্ষেত্রে অনেকগুলো ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা মাতৃভাষা ও আর্ন্তজাতিক ভাষা কোনটাই শেখার ক্ষেত্রে যথাগুরুত্ব এখনও দিতে পারিনি এবং কার্যকরী সিদ্ধান্তও নিতে পারিনি। যেমন ইংরেজি যতই অর্থকরি হোক না, ইংরেজি শেখার জন্যে ও নিজের বিষয়টি সঠিক প্রকাশ করার জন্যে বাংলা বা মাতৃভাষা শেখা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। প্রকাশের জন্যে মাতৃভাষায় ভাবার একটা বিষয় থেকেই যায়। আর এই ভাষা শিক্ষার কাজটি কোন মতেই পার্বণের মত কোন একটি উৎসব বা একটি মাসকে এ কাজে ব্যয় করলে হয় না। অবশ্য আমাদের স্বভাবের ভেতর পূঁজো করা বা উৎসব করার একটা বিষয় থেকে গেছে। যেমন আমাদের যারা মহাপুরুষ তাঁদেরকে মূহূর্তে আমরা একটি উঁচু আসনে বসিয়ে পুঁজো করা শুরু করি। কখনই চর্চা করি না।

তেমনিভাবে ফেব্রুয়ারি মাস এলে আমরা বাংলা ভাষাকে পূঁজো করি, আর পার্বণের সময় অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি চলে গেলে আবার ভুলে যাই। ভাষাচর্চার ক্ষেত্রে যেমন প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন পড়ে তেমনি নিজের ভেতরও একটি গরজ থাকতে হয়। একটা দায়বোধ থাকতে হয়। প্রতি মুহূর্তে চিন্তা করতে হয়, চেষ্টা করতে হয় বাস্তবে আমি কতটা শুদ্ধ ভাষা লিখছি ও বলছি। আমাদের শ্রুতিমাধ্যম ও লেখার মাধ্যমের মিডিয়ার ব্যাপ্তি ঘটেছে ঠিকই কিন্তু সেখানে একটি বিষয় একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, দুই মাধ্যমে শুদ্ধ বাংলা চর্চার মনোযোগটি বড়ই কম। এমনিভাবে বাংলা মাধ্যমে যারা বিভিন্ন অফিসে কাজ করছেন তারাও একটি গতানুগতিক বাংলার ভেতর থেকে যাচ্ছেন। ভাষাকে উন্নত করার না হোক শুদ্ধ চর্চার চেষ্টাটি খুবই কম। এমনকি শিক্ষা ক্ষেত্র যেখানে শিশুরা ভাষা শিখবে সেখানেও খুব ভালো অবস্থা নয়।

সাংবাদিক হিসেবে অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের আন্দোলনের সময় তাদের লেখা প্রেস রিলিজে দেখেছি সাধু ও চলিত এর মিশ্র ব্যবহার। শুধু তাই নয় আঞ্চলিক শব্দেরও অপব্যবহার। এছাড়া বিভিন্ন কলেজের নোটিস বোর্ডে যে ছুটির নোটিস বা অনান্য নোটিস দেয়া হয় তাও অনেক গুলো লক্ষ্য করে দেখেছি, সেখানে অনেক ক্ষেত্রে সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ। ভুল বাক্যও থাকে। এর একটি কারণ কিন্তু আমাদের আন্তরিকতা কম ভাষার প্রতি। দায়িত্ববোধও কম। তাই এখন সময় এসেছে, আমাদের দ্বায়িত্ববোধ জাগিয়ে তোলা। যে বোধ আমাদের মাতৃভাষা চর্চাকে বাড়াবে। বাস্তবে এর জন্যে আগে অবকাঠামো গড়ে তোলার দরকার নেই, বরং নিজের দায়বোধ, শিক্ষা এবং চর্চাকে বাড়াতে হবে। এই শিক্ষা এবং চর্চাকে বাড়াতে পারলেই তখন দেখা যাবে প্রয়োজনের তাগিদে একের পর এক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে।

অন্যদিকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে রাজনীতি, টেন্ডারবাজি, ভিসিবাজি এসব থেকে বের হয়ে এসে এখন অনেক ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কারণ, সঠিক ভাষা শিখিয়ে তারা কিন্তু শিক্ষার্থীদেরকে কর্মজীবনে পাঠাতে ব্যর্থ হচ্ছে। এমনকি সেখান থেকে যারা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশুনা করে আসেন তারাও সঠিক ভাষা শিখে বের হচ্ছেন না। শুদ্ধভাবে তারা লিখতে ও বলতে পারেন না। মিডিয়ারও দায়িত্ব থাকে সঠিক ভাষা শেখানো, সেখানেও আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। এমনকি ভাষা আন্দোলনের এই ৬৮ বছর পরে এসেও আমরা বলার জন্যে একটি প্রমিত বাংলা ঠিক করতে পারেনি। আঞ্চলিক শব্দ ও উচ্চারণে অধিকাংশই কথা বলে যাচ্ছি এটাও কম ব্যর্থতা নয়। এই প্রমিত বাংলা ঠিক করতে না পাবার ব্যর্থতা আমাদেরকে মূলত আঞ্চলিকতার মধ্যে রেখে দেয়, জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে বাধার সৃষ্টি করে।

আমাদের ভাষা আন্দোলনের নেতারা যখন পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন, তারা কিন্তু বিষয়টি একটি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার জায়গা থেকেই করেছিলেন। সে ভালোবাসাকে মর্যাদা দেবার একটিই পথ, বাংলা চর্চা বাড়ানো, বলার জন্যে একটি প্রমিত ভাষা গড়ে তোলা। আর এর জন্যে প্রয়োজন নিষ্ঠা। একুশের বইমেলা থেকে শুরু করে মিডিয়া অবধি সবখানে নিষ্ঠার একটি ঘাটতি চোখে পড়ে। স্মরণ করা প্রয়োজন, আমাদের ভাষা আন্দোলনের নেতাদের নিষ্ঠার অভাব ছিলো না। যেমন ভাষা সৈনিক গাজীউল হক যে নিষ্ঠার সঙ্গে উচ্চ আদালতে বাংলায় সওয়াল জবাব চালাতেন তা ছিলো বিস্ময়কর। যেমন নির্ভূল তেমনি প্রমিত বাংলা। অথচ আজো ফেব্রুয়ারিতে আমরা বলি, এখানে বাংলা প্রয়োজন, ওখানে বাংলা প্রয়োজন। অথচ চর্চা ও নিষ্ঠা নেই ভাষা আন্দোলনের নেতাদের মত। আমাদের জীবনে তাই এখন সব থেকে বড় প্রয়োজন ভাষা আন্দোলনের নেতাদের মত নিষ্ঠাকে জাগিয়ে তোলা। এবং সারাবছর এই নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করা। কোন মতেই যেন বাইশে ফেব্রুয়ারি সব শেষ না হয়ে যায়।


লেখক: সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক।

 

 

আরপি/এসআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top