রাজশাহী বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১


ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ করবেন যেভাবে


প্রকাশিত:
২১ জুলাই ২০২২ ০৭:০৭

আপডেট:
২১ জুলাই ২০২২ ০৭:২৩

প্রতীকী ছবি

পণ্য বা সেবা ক্রয়ের পর প্রতারিত হয়েছেন মনে করলে প্রতিকারের জন্য জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে। নিয়ম মেনে খুব সহজেই ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালে প্রতিকার পাওয়া যাবে। ন্যায্য বিচারের সঙ্গে অভিযোগকারী ভোক্তা নগদ টাকা পুরস্কার পাবেন। এখানে আপনাদের ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ দেওয়ার বিষয়ে জানাব:-

তার আগে কিছু আইন ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বলা প্রয়োজন..

বর্তমান আইনে ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তা প্রতিকারের জন্য ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ করবেন। ভোক্তার অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনে আদালতে মামলা করবে অধিদপ্তর।

ভোক্তাদের সরাসরি মামলা করার সুযোগ না দেওয়া ভোক্তা অধিকার আইনের বড় দুর্বলতা যেমন ছিল, তেমনি এ নিয়ে ক্ষোভ ছিল প্রতারিত ভোক্তাদের। সে কারণে বর্তমান সময়ে ভোক্তাদের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সরাসরি মামলা দায়েরের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ভোক্তাদের কথা বিবেচনা করেই তাঁদের সরাসরি মামলা করার সুযোগ দেওয়া হয়। ভোক্তারা এখন আইনের সুফল বেশি পাবেন।

  • আইন অনুযায়ী যেসব বিষয়ে অভিযোগ দিতে পারবেন:

মোড়কজাত পণ্যের ক্ষেত্রে ওজনে কারচুপি হচ্ছে, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ থাকছে না এবং মোড়কের উল্লিখিত দামের চেয়ে বেশি নেওয়া হচ্ছে এমন নানা প্রতারণার শিকার হলে ৩০ দিনের মধ্যে ভোক্তাকে অধিদপ্তরের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে হয়।

খসড়ায় কোনো পণ্যসেবার অসত্য বর্ণনা-সংবলিত বিজ্ঞাপন ও প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে ক্রেতাকে প্রতারণা করাকেও ‘ভোক্তা অধিকারবিরোধী কার্য’-এর তালিকায় রাখা হয়েছে। এর শাস্তি এক বছরের জেল বা দুই লাখ টাকা জরিমানা কিংবা দুটোই।

ভোক্তা আইনে এত দিন সেবা খাতের আওতায় ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কুরিয়ার সার্ভিস ও আবাসন খাত ছিল না। অর্থাৎ এসব খাতে প্রতারিত ব্যক্তিরা এ আইনে প্রতিকার পেত না। খসড়ায় এগুলোকে সেবার আওতায় আনা হয়েছে।

কোনো ভোক্তা ব্যবসায়ীকে হেয় করতে অধিদপ্তরে অভিযোগ জানালে এবং তা মিথ্যা প্রমাণিত হলে ভোক্তার তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে আইনে। এখানেও ভোক্তাকে স্বস্তি দেওয়া হয়েছে। খসড়া সংশোধনীতে এ ক্ষেত্রে এক বছরের কারাদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রতিটি দোকানে দৃশ্যমান স্থানে নিত্যপণ্যের মূল্য তালিকা টাঙানো বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দেয়। তা না মানলে শাস্তির হুমকিও দেওয়া হয়। কিন্তু এখনকার কোনো বিধি বা আইনেই এমন বিধান নেই। খসড়া সংশোধনীতে মূল্যতালিকা না টাঙানোকে ‘ভোক্তা অধিকারবিরোধী কার্য’ হিসেবে উল্লেখ করে বিষয়টিকে আইনি কাঠামোয় আনা হয়েছে।

সেবার মূল্যতালিকার ক্ষেত্রেও একই বিধান রাখা হয়েছে। সেবার আওতায় এক্স-রে, রক্ত পরীক্ষা, আলট্রাসনোগ্রাফির মতো বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক পরীক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ভোক্তা অধিকার আইনে পণ্য, ওষুধ ও সেবা বিক্রির রসিদ না দিলে শাস্তির বিধান নেই। সে কারণে নতুন একটি ধারা সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায়। খসড়ায় ক্রেতাকে রসিদ দেওয়া বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাবও করা হয়েছে।

অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি: ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ধারা ৭৬ (১) অনুযায়ী, ‘যেকোনো ব্যক্তি, যিনি, সাধারণভাবে একজন ভোক্তা বা ভোক্তা হইতে পারেন, এ অধ্যাদেশের অধীন ভোক্তা-অধিকারবিরোধী কার্য সম্পর্কে মহাপরিচালক বা এতদুদ্দেশ্যে মহাপরিচালকের নিকট ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে অবহিত করিয়া লিখিত অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবেন।’

অভিযোগ করতে ক্লিক করুন এখানে...

পণ্যের মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসটিআইয়ের আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পণ্যের দাম বাড়াতে চাইলে আগে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের তা জানাতে হবে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এটি কখনোই মানেনি। কারণ এ আইন না মানলে শাস্তির কোনো বিধান নেই। সংশোধনীর খসড়ায় এ অপরাধের জন্য এক বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা দুটোরই বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

 

আরপি/এসএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top