রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


বৃষ্টিতে ফলন বির্পযয়ের শংঙ্কায় আলু চাষীরা


প্রকাশিত:
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০২:৫৫

আপডেট:
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৩:০৭

ছবি:আলু ক্ষেত

টানা দ্ইু সপ্তাহ ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের পর দুই দিন থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয় উত্তরের জেলা নওগাঁয়। থেমে থেমে বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। সেই সাথে এই বৃষ্টিতে ফলন বির্পযয় এর আশংঙ্কা করছেন আলু চাষিরা।

তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস জানিয়েছে, মাঘের বৃষ্টিতে ফসলের কোন ক্ষতি হবেনা। এই বৃষ্টি ধান ও গমের জন্য আর্শীবাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। তবে আলুর ক্ষেতের ক্ষতি হতে পারে যদি আরও ৩/৪দিন বৃষ্টি হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলুর আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৫০ হেক্টর।

কিন্তু হঠাৎ করে মাঘের শেষে দুই দিনের এই টানা বৃষ্টিতে জেলায় আবাদি আলুর ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। আর কিছুদিন পরেই আলু তোলার সময় হবে। এরই মধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে আলুর জমির তলায় পানি জমেছে। এই অবস্থায় আলুর ক্ষেতে পচন ধরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নওগাঁ সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়ন এর কেশবপুর গ্রামের আলু চাষি লতিফুর রহমান বলেন, আমি সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করেছি। চলতি মাসের শেষের দিকে ক্ষেত থেকে আলুগুলো উঠাবো। কিন্তু থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। চেষ্টা করছি ক্ষেত থেকে বৃষ্টির পানি সরাতে কিন্তু বৃষ্টি তো একবারে থামছেইনা। যদি আরও ৩ থেকে ৪দিন ধরে বৃষ্টি হয় তবে, ক্ষেতে পানি আরও জমে যাবে আলুর ক্ষেতে পচন ধরতে পারে। ফলন কমে যেতে পারে। এমন অবস্থায় খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে।

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কাশিয়ারা গ্রামের আলু চাষি আব্দুল মুমিন বলেন , হঠাৎ মাঘের বৃষ্টিতে আলুর জমিতে পানি জমেছে। জমে থাকা পানিগুলো সেচ দেওয়া হচ্ছে। দশ কাঠা জমিতে পানি এমন ভাবে জমে গেছে যে কোন উপায় না পেয়ে আলু তুলতে বাধ্য হচ্ছি। ৩ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছি। হঠাৎ এই বৃষ্টির কারনে,ফলনের ব্যাপক ক্ষতি হবে। সব মিলে খুব চিন্তা হচ্ছে এখন। এমনটা হলে লোকশানে পড়তে হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামার বাড়ি নওগাঁর উপপরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ বলেন, এই বৃষ্টিতে ফসলের কোন ক্ষতি হবেনা। ধান-গম ও ভুট্টার জন্য আর্শীবাদ হয়েছে এই বৃষ্টি। তবে যদি একটানা ৩/৪দিন বৃষ্টি হয় তাহলে আলু ক্ষেতের ক্ষতি হতে পারে। ফলন বির্পযয় হতে পারে। কারন টানা বৃষ্টিতে ক্ষেতে ইতিমধ্যে আলুর ক্ষেতে পানি জমে গেছে। অনেক আলু চাষি ক্ষেত পানি সরানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু যদি আরও ২/৩দিন ধরে বৃষ্টি হয়,তবে ক্ষেত থেকে পানি আরও জমে যাবে। যার কারনে আলুর ক্ষেতে পচন ধরতে পারে। তাহলে আশানুরুপ ফলনের বিপর্যয় হতে পারে। চাষিরাও এতে করে লোকশানের মুখে পড়তে পারে।

তিনি আরও বলেন, এমন অবস্থায় আলুগুলো তুলেও কোনো লাভ হবে না। তুলে রেখে দিলেও সেগুলো পচে যেতে পারে। বৃষ্টি কমার পর অবস্থা অনুযায়ী ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া নাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। মাঠ পর্যায়ে কৃষি অফিসাররা চাষিদের সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিবেন।

নওগাঁর বদলগাছীর স্থানীয় কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। রবিবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

 

 

আরপি/এসআর-০৮



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top