রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


দেশে জাপানিজ এনকেফালাইটিসের প্রাদুর্ভাব

৫ বছরে আক্রান্ত ৩৮৮, রেড জোনে রাজশাহী


প্রকাশিত:
১০ জানুয়ারী ২০২৩ ০৭:৫২

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ০৫:১২

প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ। ছবি: রাজশাহী পোস্ট

করোনা ভাইরাস বিদায় না নিতেই বাংলাদেশে চোখ রাঙাচ্ছে মশাবাহিত রোগ ‘জাপানিজ এনকেফালাইটিস’ ভাইরাস। দেশে গত ৫ বছরে ১২ হাজার ১৭২ জনের নমুনা পরীক্ষায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮৮ জন। আর ৪ বছরে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৭৯ জনের। সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে রাজশাহী জেলা। ইতোমধ্যে জেলাটিকে রেড জোন তালিকাভুক্ত করে কাজ শুরু করেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। সোমবার (৯ জানুয়ারি) রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে নগরীর এক রেস্তোরাঁয় আয়োজিত দিনব্যাপী এ কর্মশালায় সার্বিক সহযোগিতা করে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর, বি) ও বেসরকারি সংস্থা পাথ। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার।

অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন- ডেপুটি পরিচালক ডা. আনোয়ারুল কবীর, ইপিআই ও সার্ভিলেন্সের ডেপুটি পরিচালক ডা. জেসমিন আরা খানম, এমএনসিএন্ডএইচ‘র প্রাক্তন পরিচালক ডা. মো. শামসুল হক, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার ডা. শারমিন সুলতানা, পাথের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ডা. কামরান মেহেদি, আইসিডিডিরআর‘র প্রধান গবেষক ড. রেবেকা সুলতানা ও সহকারি প্রধান গবেষক ডা. আরিফা নাজনিন প্রমুখ। কর্মশালায় সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সিনিয়র রিপোর্টার ড. আইনুল হক ও ভোরের কাগজ প্রতিনিধি আমানুল্লাহ আমানসহ বিভাগের সব জেলার সিভিল সার্জন, তত্বাবধায়ক, স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নেন।

কর্মশালা থেকে জানানো হয়, মূলত কিউলেক্স মশার কামড়ে ছড়ানো জাপানিজ এনকেফালাইটিস ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে দেশের ৩৬ জেলায়। সংক্রমণে এগিয়ে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ। গতবছর সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়েছে রাজশাহী বিভাগে। এ বিভাগের রাজশাহী ও নওগাঁ জেলার অবস্থা বেশি আশঙ্কাজনক। মে থেকে ডিসেম্বর মাসে বেশি সংক্রমণ হওয়া এ ভাইরাসে সর্বোচ্চ আক্রান্ত হয়েছে শিশুরা। গ্রামাঞ্চলে মশার বংশবৃদ্ধি হওয়া এলাকায় এ ভাইরাসের বেশি সংক্রমণ হয়ে থাকে।

কর্মশালায় গবেষকরা জানান, গত ১০ বছরের পরিসংখ্যানে রংপুর বিভাগে সর্বোচ্চ ৪৫ শতাংশ জাপানিজ এনকেফালাইটিস ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাজশাহী বিভাগে শনাক্তের হার ৩০ শতাংশ। সবচেয়ে কম আক্রান্ত বিভাগ বরিশাল ও সিলেট বিভাগ। এ দুই বিভাগে আক্রান্ত হন মাত্র এক শতাংশ রোগী। এ পরিসংখ্যানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৮ ও ৯ শতাংশ রোগী আক্রান্ত হন।

ইপিআই শিডিউলের আওতায় এ ভাইরাসের টিকা অন্তর্ভূক্তির প্রত্যাশা ব্যক্ত করে চিকিৎসকরা জানান, ২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ ভাইরাসের টিকা অনুমোদন দিয়েছে। সামনে বছর বাংলাদেশে সেই টিকা আসবে এবং প্রাথমিকভাবে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের চারটি জেলায় জাপানিজ এনকেফালাইটিস ভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। সকলের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে সব ধরণের সংকট মোকাবেলা করার আহবানও জানান চিকিৎসকরা।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top