রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


কুবিতে ফাঁকা গুলি-ককটেল বিস্ফোরণ, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস


প্রকাশিত:
২ অক্টোবর ২০২২ ০৫:৪৭

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ২২:৩২

সংগ্রহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস।

শনিবার (১ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ অর্ধাশিত মোটরবাইকে করে পুরো ক্যাম্পাসে মহড়া দেন।

এসময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। দেড় শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে প্রবেশ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শোডাউনের পর বঙ্গবন্ধু হলের সামনে অবস্থান করে ইলিয়াস-মাজেদ অনুসারীদের বের হয়ে আসতে বলেন। এসময় এই কমিটির আগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহীর পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে মোটর সাইকেল আরোহীরা। এক পর্যায়ে তারা হলের নিচে থাকা সাইকেল ভাঙচুর করেন। প্রায় ২০ মিনিট ক্যাম্পাসে অবস্থান করার পর প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দীকী ও হল প্রাধ্যক্ষরা এসে তাদের সরিয়ে নেয়। পরে ইলিয়াসের অনুসারীরা তাঁদেরকে প্রতিহত করতে গেলে তারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করে।

এসময় ইলিয়াসের অনুসারীদের রামদা, হকি স্টিক ও লাঠিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র হাতে দেখা যায়। প্রধান ফটকের সামনে এসে তারা প্রক্টরের সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। ‘ক্যাম্পাস ও প্রধান ফটক বন্ধ থাকার পরও কিভাবে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে শোডাউন করে’ তারা জানতে চান। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, পুলিশ প্রশাসনের সামনে কিভাবে অস্ত্রসহ বহিরাগতরা শোডাউন দেয়?

এবিষয়ে রেজা-ই-এলাহী বলেন, কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মোস্তফা কামালকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিল দিয়েছি। কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার বিষয়টিকে ঘোলাটে করার জন্য তারা (ইলিয়াসের অনুসারীরা) বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্ত করার পরও তারা বিষয়টিকে অস্বীকার করে যাচ্ছে। আর ক্যাম্পাসের যে কেউই আমার নামে স্লোগন দিতে পারে। সবজায়গায় আমার অনুসারী আছে।

ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭১ সালের কালোরাত্রি ছাড়া হলের ভিতরে ঢুকে গুলি করা, ককটেল মারা, পুলিশ এবং প্রক্টরের সামনে দিয়ে ক্যাম্পাস গেইট অতিক্রম করে হলের (বঙ্গবন্ধু) দু ’তলায় উঠে যাওয়া, প্রক্টরের পাশেই ককটেল ফোটানো, এটি বিরল ঘটনা হয়ে থাকবে। এখানে তিন-চারজন সাবেক ছাত্র এবং একজন রানিং ছাত্র, অটোচালক, সিএনজি চালক, বহিরাগত, বিভিন্ন মামলার আসামী ছিল।’

তিনি আরও বলেন, আমরা কুবি প্রশাসনকে বলব ছেলেদের দুপুরে ঘুমানোর যদি নিরাপত্তা না থাকে তাহলে এ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া উচিত। প্রশাসনের নিরব ভূমিকার কারণে তাদের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্রসহ প্রশাসনের লোকের সামনে কিভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকে। যারা এ ঘটনায় জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে এজাহারভুক্ত মামলা করতে হবে। তা না হলে সব শিক্ষার্থী সাথে নিয়ে আমরা কঠিন আন্দোলনে যাবো, দরকার হলে আমরণ অনশন করবো।

এবিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকেঁ পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা প্রাধ্যক্ষদের নিয়ে বসেছি এবং উপাচার্যের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ থাকবে কিনা জানতে চাইলে বলেন, আমি তাদের সাথে কথা বলতেছি।

গত শুক্রবার রাত ১১টা ৪৯ মিনিটে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কুবি ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি করা হয়। পরে নোটিশ সরিয়ে নিলে দ্বিধাদ্বন্দ্ব বাড়তে শুরু করে৷ পরে কমিটি বিলুপ্তি বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নির্বাহী সংসদের একাধিক নেতার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাদের মধ্যে তথ্যগত পার্থক্য দেখা যায়।

এদিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিবাদমান দুইটি গ্রুপও কমিটি বিলুপ্তি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান করছেন। এতে সংঘাতের সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আরপি/ এসএইচ

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top