রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় ‘করোনা লেভি’ কর : ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা


প্রকাশিত:
২২ মে ২০২০ ০০:৫৩

আপডেট:
২২ মে ২০২০ ০০:৫৩

ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ অরগানাইজেশান (ইডিআরও) আয়োজিত অনলাইন সেমিনারে বক্তারা

করোনা ভাইরাসের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় অর্থ সংগ্রহের জন্য সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের উপর ‘করোনা লেভি’ কর আরোপ করার যেতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।

এছাড়াও করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রয়োজনে ঘাটতি বাজেট প্রণয়ন, আইএমএফ থেকে ঋণ গ্রহণ ও সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ কোন কোন খাতে কিভাবে ব্যয় করলে সর্বোচ্চ উপযোগ পাওয়া যেতে পারে সে বিষয়েও মতামত দেন বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার (২১ মে) ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ অরগানাইজেশান (ইডিআরও) আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২০-২১’ শীর্ষক অনলাইন সেমিনারে (ওয়েবিনার) বক্তারা এসকল গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

ইডিআরও’র কার্য নির্বাহী পরিচালক ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিল হোসেনের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে অংশগ্রহণ করেন- অষ্ট্রেলিয়ার ডিকিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক ড. একেএম মোক্তারুল ওয়াদুদ, সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান এবং বিশিষ্ট ব্যাংকার ও লেখক মাজেদুল হক।

ওয়েবিনারে ড. একেএম মোক্তারুল ওয়াদুদ বলেন, করোনা সংকটকালীন অর্থ সংগ্রহের জন্য ‘করোনা লেভি’ নামক কর সক্ষম ব্যক্তিদের উপর আরোপ করা যেতে পারে। এর সাথে বাংলাদেশের শিল্প, কল-কারখানার শ্রমিকদের খাবার ও সেবা প্রদানের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে। প্রয়োজনে জনগণের হাতে টাকা প্রদানের জন্য বাজেট ঘাটতি করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) হতে ঋণ নেওয়া যেতে পারে।

তিনি আরো বলেন, ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হলে সরকারি কর সংগ্রহের সমস্যা অনেকাংশে কাটানো সম্ভব হবে। অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ কমানো ঠিক হবে না। কারন অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যয় কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে।

সিপিডি’র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যখাতে ২০২০-২১ সালের বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সেই সাথে বরাদ্দকৃত অর্থ যেন যথাযথভাবে খরচ করে সংক্রমণ ও চিকিৎসা সেবা জনগণকে দেওয়া হয়, সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, প্রায় পাঁচ কোটি দরিদ্র জনগণের খাবার নিশ্চিত করতে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষকে সম্পদ প্রদান করতে হবে। এজন্য প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ লোকের খাবার সংস্থানের জন্য বিশেষ প্যাকেজ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, স্বাধীনতার পর আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। কিন্তু কর আহরণ বাড়েনি। সম্পদের অপচয় বেড়েছে। করোণা পরিস্থিতির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ক্ষয়ক্ষতি হিসেব করে মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষার জন্য কৃষিসহ সকল খাতে দুর্যোগ মোকাবেলা করতে জেট বরাদ্দ থাকতে হবে।

বিশিষ্ট লেখক ও ব্যাংকার মাজেদুল হক বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ১৭ কোটি জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি ও কৃষকদের কৃষি পণ্য ভর্তুকি প্রদান করতে হবে। এছাড়াও প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা বাড়িয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে হবে বলে মতামত দেন তিনি।

ওয়েবিনারের আয়োজন এবং প্রযুক্তি সহায়তায় ছিলেন ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (ইডিআরও) সহকারি গবেষক হেদায়েতুল ইসলাম।

 

আরপি/ এএন



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top