রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়ায় ক্ষোভ ঝাড়লেন মমতা


প্রকাশিত:
৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৪০

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ১৬:২৯

সংগৃহিত

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে রয়েছেন। আজ এই সফরের শেষ দিন। আজ (বৃহস্পতিবার) রাত ৮টায় তাঁর দেশে পৌঁছার কথা। তবে এখনো তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কারণ, শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য মমতাকে কোনো আমন্ত্রণ জানায়নি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এতে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আমন্ত্রণ না জানানো প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, আমি দেশের পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে বলতে চাই না। হাসিনা জি এসেছেন। ওদের সবার সাথে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই ভালো। সেটা আজকে নয়, চিরকাল। পূজার সময় আমি উনাকে চিঠি দিই। উনি আমাকে শাড়ি পাঠান। আমিও পাঠাই ঈদের সময়। উনি আম পাঠান, ইলিশ মাছ পাঠান। আমরাও যতটা পারি করি। উনি নিজেই (সাক্ষাতের) ইচ্ছে প্রকাশ করলেন। আমি এই প্রথম দেখলাম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এসেছেন (কিন্তু) বাংলা বাদ। আমি কৃতজ্ঞ যে উনি দেখা করতে চেয়েছিলেন। আমি সংবাদমাধ্যমে দেখেছি। তবুও এটা দেশের ব্যাপার, আমি (তাই কিছু) বলছি না। তবুও (আমার প্রতি কেন্দ্রের) এত রাগটা কিসের?

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্যকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

এরপর তিনি হিন্দিতে বলেন, বড় লোকেদের এত ভয়ের কী আছে? শিকাগো থেকে আমন্ত্রণ এসেছিল কিন্তু আটকে দিয়েছে, আমাকে যেতে দেওয়া হয়নি। দিল্লির স্টিফেন্স কলেজ থেকে আমন্ত্রণ এসেছিল, আটকে দিয়েছে, যেতে দেওয়া হয়নি। চীন থেকে আমন্ত্রণ এসেছিল, সেখানেও আটকে দেওয়া হয়েছে, যেতে দেওয়া হয়নি। তার অভিমত, বাংলায় ঘুরলেই সারা বিশ্ব ভ্রমণ হয়ে যায়। বাইরে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

এর আগে সকালে কলকাতার ধর্মতলায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তিতে মাল্যদান করেন মমতা। সে সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরেও তাকে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার আমন্ত্রণ না জানানোয় কেন্দ্র সরকারের প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান মমতা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তো এই কয়দিন ছিলেন। কিন্তু আমাদের কাউকে তো বলেনি। আজকে পর্যন্ত তো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকার কথা।

উল্লেখ্য, চার দিনের ভারত সফরে গত সোমবার দিল্লিতে এসে পৌঁছান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনার এই সফরে একাধিক চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে।

হাসিনার ভারত সফরের প্রথম দিনেই বাংলাদেশের মানুষ, সে দেশের শিক্ষক সমাজকে শুভেচ্ছা ও প্রণাম জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিন কলকাতায় একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় মমতা বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ভারতে এসেছেন। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে আমাদের শুভেচ্ছা, আমাদের অভিনন্দন এবং আমাদের প্রণাম, সালাম জানাই।

মাস খানেক আগে শেখ হাসিনা নিজেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে আসন্ন দিল্লি সফরে তার সঙ্গে সাক্ষাতের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। হাসিনা লিখেছিলেন, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমার নির্ধারিত নয়াদিল্লি সফরকালে আপনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা রাখি।

এর আগে গত ২০১৭ সালেও দিল্লি সফরে এসে মমতার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছিলেন হাসিনা। দুই নেত্রীর একান্ত বৈঠকে উঠে এসেছিল তিস্তা পানি বণ্টনসহ একাধিক দ্বিপাক্ষিক বিষয়। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ঝটিকা সফরে কলকাতায় এসেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সেবার ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীর আমন্ত্রণে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে ইডেনে অনুষ্ঠিত টেস্ট ম্যাচ দেখতে কলকাতায় হাজির ছিলেন হাসিনা। সেবারও কলকাতার তাজ বেঙ্গল হোটেলে মমতার সঙ্গে একান্তে কথা হয়েছিল হাসিনার।

মমতা ও শেখ হাসিনার সুসম্পর্ক সর্বজনবিদিত। অতীতে মমতার জন্য পূজার শাড়ি, মৌসুমি ফল আম, পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য ইলিশও পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। দুই বাংলার দুই নেত্রীর সম্পর্কের আলোকে হাসিনার দিল্লি সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ করা হবে বলে জল্পনা ছিল। মমতার পাশাপাশি হাসিনার এই ভারত সফরে সীমান্তবর্তী রাজ্যের অন্য মুখ্যমন্ত্রীদেরও আমন্ত্রণের জল্পনা ছিল। তবে সেই জল্পনা সত্যি হয়নি।

আরপি/ এসএইচ ১৪

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top