রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


পেট্রোল পাম্প মালিকদের ধর্মঘটের হুমকি


প্রকাশিত:
২৫ আগস্ট ২০২২ ০৩:২২

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৩৮

ছবি: সংগৃহীত

জ্বালানি মন্ত্রণালয়, বিপিসি ও অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তেল বিক্রির কমিশন মূল্যের ওপর শতকরা হার বা পার্সেন্টেজ ভিত্তিতে করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউশন, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেই সঙ্গে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এসব দাবি পূরণ না হলে আগামী ৩১ আগস্ট পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার আল্টিমেটাম দিয়েছে সংগঠনটি।

বুধবার (২৪ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আল্টিমেটাম দেন অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মো. নাজমুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমাদের কমিশন বাড়ানোর জন্য আমরা বারবার দাবি জানিয়ে আসছি। ২০১৩ সালে আমাদের তেল বিক্রিতে কমিশন অকটেন ও পেট্রোলে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ ও ডিজেলে ৩ দশমিক ২২ শতাংশ নির্ধারিত ছিল।

সংবাদ সম্মেলনে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হক বলেন,‘আমরা ২০১৬ সাল থেকে সাত শতাংশ করার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু সেটা না করে শতাংশের বদলে পয়সার হিসাব নির্ধারণ করা হয়েছে। যার ফলে তেলের দাম বাড়লেও আমাদের কোনো লাভ হয়নি। বরং শতাংশের পরিমাণ কমে পেট্রোল-অকটেনে ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ ও ডিজেলে ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়ে গেছে।’

এ সময় পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে নাজমুল হক বলেন, আমাদের দাবি ও সরকারের সাত শতাংশ কমিশন করার আশ্বাস বাস্তবায়ন না হলে ব্যবসা বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না। পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো-

১. জ্বালানি মন্ত্রণালয়, বিপিসি ও অ্যাসোসিয়েশন নেতাদের মাঝে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তেল বিক্রির কমিশন তেলের মূল্যের ওপর শতকরা হার বা পার্সেন্টেজ ভিত্তিতে করতে হবে।

২. তেলের পরিমাপে কারচুপি রোধে নিয়মিত মনিটরিং বা অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিপিসি বা বিপণন কোম্পানি প্রতিনিধি ছাড়া ভোক্তা অধিদফতর, বিএসটিআইয়ের অভিযান এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা যাবে না। পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কারচুপি রোধে নিয়মিত মনিটরিংয়ের জন্য অনতিবিলম্বে তেল কোম্পানি, বিএসটিআই এবং অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত মনিটরিং সেলের কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

৩. বিপিসি, বিপণন কোম্পানি এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয় ছাড়া অন্য কোনো দফতর বা প্রতিষ্ঠান পাম্পের কাগজপত্র চেক করার নামে পাম্প মালিকদের হয়রানি করতে পারবে না। পাম্প পরিদর্শনকালে সঠিক ও ভুল উভয় তথ্য লিপিবদ্ধ এবং প্রচার করতে হবে। সেই সঙ্গে তার কপি মালিককে সরবরাহ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

৪. সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের (সওজ) ইজারা মাশুল যৌক্তিক হারে নির্ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি বিপিসি, বিপণন কোম্পানি এবং বিএসটিআই ও অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত যৌথসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাম্পের আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিবারেশন (যার সঙ্গে ভোক্তার কোনো স্বার্থ জড়িত নেই) সার্টিফিকেট নবায়ন প্রথা বাতিল করতে হবে।

৫. জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারির সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাস্তায় ট্যাংক লরির কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে ট্যাংকলরি চালককে পুলিশের হয়রানি করা যাবে না। সেই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ট্যাংক লরির কাগজপত্র ডিপো গেটে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এবং মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবরের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সব ডিপোতে পার্কিং স্ট্যান্ড নির্মাণ করতে হবে। পাশাপাশি ট্যাংক লরি চালকদের জন্য বিআরটিএ কর্তৃক আলাদা কাউন্টার করার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়া শোধনাগার সুবিধা সমন্বিত বিভিন্ন গ্যাস ফিল্ডের শোধনাগার পূর্বের ন্যায় চালু করতে হবে।

এসব দাবি আগামী সাত দিনের মধ্যে মেনে না নিলে ৩১ আগস্ট ভোর থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন মোহাম্মদ নাজমুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব জুবায়ের আহমেদ চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ হারুন অর রশীদ, যুগ্ম মহাসচিব মীর আহসান উদ্দিন পারভেজ, বরিশাল বিভাগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন সিকদার, চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি এহসানুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

আরপি/ এসএইচ ০৩

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top