রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


রাশিয়া থেকে আসবে জ্বালানি, প্রক্রিয়া ঠিক করবে কমিটিফাইল


প্রকাশিত:
১৯ আগস্ট ২০২২ ০৫:৪৭

আপডেট:
১৯ আগস্ট ২০২২ ০৫:৫২

ফাইল ছবি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও পশ্চিমাদের নানা নিষেধাজ্ঞায় অস্থির বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের বাজার। দেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের সংকট কাটাতে রাশিয়া থেকে তেল কিনতে আলোচনা করছে জ্বালানি তেলের। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) এই আলোচনার দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। সেজন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

তেল কেনা ও লেনদেনে মুদ্রার বিনিময় পদ্ধতি কী হবে- এসব প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছে গঠিত ওই কমিটি। ইতোমধ্যেই আলোচনা চূড়ান্ত করতে রুশ প্রতিষ্ঠান রসনেফটের প্রতিনিধিদের ঢাকায় আসার কথাও রয়েছে।

জানা গেছে, রুশ তেল উৎপাদন ও বিপণন কোম্পানি রসনেফট বাংলাদেশের কাছে প্রতি ব্যারেল ডিজেল ৫৯ ডলারে বিক্রি করতে চায়। সে ক্ষেত্রে প্রতি ব্যারেলে ১৫৯ লিটার এবং ডলার ৯৫ টাকা (আন্ত:ব্যাংক মূল্য) দরে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম পড়বে মাত্র ৩৫ টাকা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশে জ্বালানির এই সংকটের মুহূর্তে এত সস্তায় তেল পাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তা কিনতে রাশিয়ার সঙ্গে এরই মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন:তেল বা স্বর্ণের চেয়েও দামি হতে পারে ডাটা

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) এই আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কম দামে তেল কিনতে পারলে লাভ বাংলাদেশের।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে না প্রকাশ না করার শর্তে বিপিসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, রাশিয়ার রসনেফট প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা তাদের ঢাকায় আসতে বলেছি। তারা এলে আমরা আলোচনায় বসব।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, রাশিয়া থেকে কোন প্রক্রিয়ায় আসবে, জাহাজ ভাড়া কত পড়বে, কোন ব্যাংকের মাধ্যমে, কোন মুদ্রায় পেমেন্ট হবে, পেমেন্ট ক্লিয়ার করতে হবে কতদিনের মধ্যে- এ ধরনের অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হবে।

বাংলাদেশে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টন। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৬১ লাখ টনের বেশি জ্বালানি তেল আমদানি করা হয়। এরমধ্যে প্রায় ৫০ লাখ টনই আনা হয় পরিশোধিত তেল।

আরও পড়ুন: পুঁজি ফিরেছে ৫ হাজার কোটি টাকা, স্বস্তিতে বিনিয়োগকারীরা

চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের রোষানলে পড়ে রাশিয়া। এরপর দেশটির ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পশ্চিমারা। এতে রাশিয়ার তেল রফতানি কমে গিয়ে বিশ্ববাজারে জ্বালানির ঘাটতি দেখা দেয়। বিভিন্ন দেশের মতো সংকটে পড়ে বাংলাদেশও। দেশে জ্বালানি দাম বৃদ্ধি ও সংকটে পড়ে একদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে লোডশেডিংয়ে ব্যাহত হচ্ছে শিল্প-উৎপাদনও। এতে সার্বিকভাবে দেশে মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি তৈরি হয়েছে অস্থিরতা।

এদিকে, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে রাশিয়ার জ্বালানি তেল রফতানি কমে যাওয়ায় এশিয়া ও আফ্রিকায় নতুন বাজার খুঁজতে শুরু করে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল উত্তোলনকারী দেশটি। জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও সস্তায় পেয়ে রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কিনতে শুরু করে চীন ও ভারত। এরই মধ্যে বাংলাদেশকেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড অয়েল) কেনার প্রস্তাব দেয় রাশিয়া। তবে দেশে রুশ ক্রুড পরিশোধন সক্ষমতা না থাকায় সেই প্রস্তাবে অগ্রসর হয়নি সরকার। পরবর্তীকালে গত সপ্তাহে পরিশোধিত তেল বিক্রির প্রস্তাব পাঠায় রাশিয়ার তেল উৎপাদন ও বিপণন কোম্পানি রসনেফট। এরপরই তেল কিনতে আগ্রহী হয় বাংলাদেশ।

বিষয়টি নিয়ে গত মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানির বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রয়োজনে রুশ মুদ্রা রুবল তেল কেনার কথাও বলেন সরকারপ্রধান। এরপরই বিষয়টিতে জোর তৎপরতা শুরু করে সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়।

 

আরপি/ এসএইচ ১২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top