রাজশাহী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৮ই বৈশাখ ১৪৩১

অর্থাভাবে পাচ্ছেন না চিকিৎসা

২১ বছর শিক্ষকতা করেও পাননি বেতন-ভাতা


প্রকাশিত:
৫ জুন ২০২১ ০০:১১

আপডেট:
৫ জুন ২০২১ ০০:১২

ছবি প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ২১ বছর ধরে বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে চাকরি করেও এখন পর্যন্ত পাননি কোন সরকারি বেতন-ভাতা। বর্তমানে প্যারালাইসিস সহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েও অর্থাভাবে উপযুক্ত চিকিৎসা না পেয়ে দূর্বিষহ জীবন পার করছেন শিবগঞ্জের মনাকষা ইউনিয়নের সাতরশিয়ার মো: তারিফ হোসেন নামের এক শিক্ষক।

তিনি ২০০০ সালে উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের রশুনচক বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে অদ্যাবধি শিক্ষকতা করেই আসছেন। কিন্তু স্কুলটি এমপিও ভুক্ত হলেও সহকারি শিক্ষক তারিফ হোসেন সহ কয়েকজন শিক্ষক এখন পর্যন্ত কোন সরকারি বেতন-ভাতা না পেয়ে অনেক কষ্টেই কাটাচ্ছিলেন পারিবারিক জীবন।

গত ১ বছর যাবৎ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে বাবার সামান্য সম্পদ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু গত ৬ মাস যাবৎ সারা শরীরে ঘা হয়ে জটিল এক রোগে আক্রান্ত হলে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তাঁর।

কিন্তু পরিবার ও স্বজনদের সহযোগীতা নিয়েও উন্নত চিকিৎসার অর্থ যোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। এরই মাঝে গত ২ মাস থেকে আবারো প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হলে চরম দূর্বিষহ হয়ে ওঠে এই শিক্ষকের জীবন। উন্নত চিকিৎসা তো পাচ্ছেন না, বরং বর্তমানে খাওয়া ও পরা সহ ব্যক্তিগত সকল কাজেই তিনি অক্ষম হয়ে পড়েছেন।

রোগাক্রান্ত সেই শিক্ষকরে সাথে কথা বললে তিনি জানান, দীর্ঘ ২১ বছর যাবৎ আমি সরকারি এমপিওভুক্ত একটি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে চাকরি করে আসছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রকার বেতন-ভাতা আমি পাইনি।

অদ্যাবধি আমি সরকারের সুদৃষ্টির অপেক্ষাই রয়েছি। আমার মতো হতভাগা আর কেউ নেই। বর্তমানে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে আমি চরম অসহায় হয়ে পড়েছি। পরিবার ও স্বজনদের সহযোগীতা নিয়ে কোন রকমে এই পর্যন্ত জীবন অতিবাহিত করলেও বর্তমানে আমি সর্বদিক দিয়েই অক্ষম হয়ে পড়েছি। ঔষধ কেনার পয়সাও আমার কাছে নেই। আমি বাঁচতে চাই।

বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি সহ আমার উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকার, জেলা প্রশাসক মহোদয়, উপজেলা প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধি গণের নিকট দোয়া ও সহযোগীতার আবেদন করছি। মিডিয়ার সামনে এসব অসহায়ত্বের কথা জানানোর সময় কেঁদে ফেলেন সেই শিক্ষক।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রশুনচক বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, মো: তারিফ হোসেন অত্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষকতা করে আসছেন। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় তিনি এখন পর্যন্ত কোন সরকারি বেতন-ভাতা পাননি। তবুও বেতনের আশায় তিনি অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

আমরাও আমাদের জায়গা থেকে সহযোগীতা করে আসছি। বর্তমানে বিভন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে আসলেই তাঁর জীবনটি অনেকটাই দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এখন উনার চিকিৎসার জন্য অর্থের প্রয়োজন। উনার পক্ষ থেকে আমি সকলের সহযোগীতা ও দোয়া কামনা করছি। এসময় পরিবার, আত্নীয়-স্বজন ও তাঁর সহকর্মীগণ তাঁর জন্য সকলের দোয়া ও সহযোগীতা কামনা করেছেন ।

 

আরপি / আইএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top