রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

চারঘাটের তরুণরা ঝুঁকছে বিকল্প নেশায়, ছুটছে ওষুধের দোকানে


প্রকাশিত:
১৪ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৪১

আপডেট:
১৪ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৪৬

প্রেসক্রিপশন ছাড়াই বাজারে অবাধে বিক্রির সুযোগে ব্যথানাশক বিভিন্ন ওষুধে ঝুঁকে পড়ছে মাদকাসক্তরা। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় মাদকের বিকল্প হিসেবে ব্যথানাশক বিভিন্ন ট্যাবলেটের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বাজারে ৫০, ৭৫ ও ১০০ মিলিগ্রামের ট্যাবলেটের পাতা চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। তবে সব ধরনের ব্যথানাশক ট্যাবলেটের চাহিদা নেই মাদকসেবির কাছে। নির্দিষ্ট কিছু কোম্পানির ওষুধেই আগ্রহ তাদের।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, মার্কেট ধরে রাখতে কৌশল অবলম্বন করে ব্যথানাশকের নাম করে নেশা জাতীয় ক্যাপেইন দিয়ে তৈরি ট্যাবলেট বাজারজাত করছে কিছু অসাধু কোম্পানি। এসব ওষুধ সেবন করলে ব্যথার পাশাপাশি ঘুম ও নেশার চাহিদা মেটায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক শ্রেণির বিপণনকারী লোকজন গোপনে এসব ওষুধের দোকানগুলোতে প্রচার-প্রচারণা চালায়। তারপর দোকানের মালিক-কর্মচারী রাতারাতি ধনী হওয়ার স্বপ্নে অতি লাভের আশায় সরবরাহ করে সেবনকারিদের মাঝে। যা দিনের পর দিন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রশাসনের তৎপরতায় ইয়াবা-হেরোইন-ফেন্সিডিল সুলভ না হওয়ায় স্বল্প দামের এসব ট্যাবলেটই বর্তমানে মাদকসেবিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানি ভিন্ন ভিন্ন নামে এ জাতীয় ট্যাবলেট ছেড়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই ওষুধের দোকানগুলোতে মাদকসেবনকারীদের আনাগোনা দেখা যায়।

জানা যায়, চারঘাট বাজারের মেডিকেল মোড়, চৌরাস্তা মোড়, আড়ানী রোড, সরদহ বাজার, নন্দনগাছী বাজার, কাঁকরামারী বাজারসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ওষুধের দোকানে ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ওইসব ওষুধ দেদারছে বিকিকিনি হচ্ছে।

নেশাজাতীয় ট্যাবলেট কিনতে আসা একাধিক সেবনকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা টাপেন্টা, লোপেন্টা, পেন্টাডল ও সিনটা নামের কিছু ব্যথানাশক ওষুধকে মাদকের পরিবর্তে সেবন করছে। এসব ট্যাবলেটে মাদকের মতোই নেশা হয় বলে তাদের ভাষ্য।

চারঘাট বাজারের নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ওষুধের দোকানের মালিক জানান, তাদের কাছ থেকে মাদকসেবিরা ব্যথানাশক ট্যাবলেট কিনে নিয়ে যায়। বেশি চাহিদার কারণে এসব ট্যাবলেটের খুচরা মূল্য ২৫-৩০ টাকা হলেও প্রতিপিস ৮০-১০০ টাকা দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আতিকুল হক জানান, কোনো সুস্থ মানুষের জন্য এ ওষুধ ব্যবহার করা ঠিক নয়। যারা নিয়মিত ব্যবহার করে তারা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। সবসময় দুর্বল ও ঝিমুনি লাগে। স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। এছাড়া হার্টসহ অন্যান্য অঙ্গের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।

এ বিষয়ে গত সোমবার (১২অক্টোবর) চারঘাট উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি বলেন, এক শ্রেণীর যুবকরা ফার্মেসি থেকে বিভিন্ন ওষুধ কিনে নেশা করছে। এজন্য প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রি করা যাবে না। যেসকল ফার্মেসী নির্দেশনা অমান্য করবে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেন তিনি।

তিনি বলেন, মাদকের সঙ্গে কোন আপোষ নয়। যুব সমাজকে রক্ষা করতে হলে মাদক প্রতিরোধের বিকল্প নেই। মাদক মুক্ত চারঘাট-বাঘা গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top