রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০

এই মেয়েটার স্বামীকে বলে দিস, আমি তাকে খালাস করে দিয়েছি


প্রকাশিত:
১৫ মে ২০২০ ০৩:০৪

আপডেট:
১৫ মে ২০২০ ০৩:০৪

ছবি: সংগৃহীত

স্বামীকে ফেলে প্রেমিককে বিয়ে করে সংসার করার জন্য অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছেন স্ত্রী মুক্তি বেগম। ‘তাকে হত্যা করা হয়েছে’ এমন একটি ছবি এডিট করে রাখেন তিনি।

প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যাওয়ার সময় ননদের মোবাইলের ইমোতে ‘তাকে হত্যা করা হয়েছে’ এডিট করা ছবি দিয়ে একটি খুদেবার্তা পাঠান মুক্তি।খুদেবার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘তুই যে-ই হোস; এই মেয়েটার স্বামীকে বলে দিস, আমি তাকে খালাস করে দিয়েছি, তার সব জেদ আজ শেষ করে দিয়েছি।

বাড়ি যাচ্ছিলি তাই না? আসল বাড়ি পাঠিয়ে দিলাম আজ। লাশটা খুঁজে নিস- টাটা।’ এরপর বন্ধ করে দেয়া হয় মুক্তির মোবাইল নম্বর।গত ১১ মে বাড়ি যাওয়ার কথা বলে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজাপুর থেকে নিখোঁজ হন মুক্তি।

এরপর ননদের মোবাইলের ইমোতে ‘তাকে হত্যা করা হয়েছে’ ছবি দিয়ে ওই খুদেবার্তা পাঠানো হয়।এমন বার্তা পেয়ে স্বামী আকমল হোসেন বাদী হয়ে ওই দিনই বড়াইগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি ও ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের সহায়তায় ১৩ মে মুক্তি ও তার প্রেমিক আবেদকে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার দেবগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়।

পরে তাদের নাটোরে নিয়ে আসে পুলিশ।বৃহস্পতিবার (১৪ মে) দুপুর ১টার দিকে নাটোর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহা।এসপি লিটন কুমার সাহা বলেন, আকমল হোসেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল গ্রামের মমিন সরদারের ছেলে।

তার স্ত্রী মুক্তি বেগম একই গ্রামের মমিন প্রামাণিকের মেয়ে। তারা সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই-বোন। পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।তিনি বলেন, বিয়ের পর আকমল হোসেন স্ত্রী মুক্তি বেগমকে সঙ্গে নিয়ে ঈশ্বরদী শহরে ভাড়া বাসায় থেকে একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন।

ঈশ্বরদীর বাসায় থাকা অবস্থায় মুক্তির সঙ্গে মোবাইলে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার দেবগ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে সানোয়ার হোসেন আবেদের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু আবেদের কাছে বিয়ের কথা গোপন করেন মুক্তি।

এজন্য নিজেকে হত্যার নাটক সাজান।এসপি লিটন কুমার সাহা আরও বলেন, নাটকের অংশ হিসেবে ১১ মে বাড়ি যাওয়ার কথা পালিয়ে যান মুক্তি। সেই সঙ্গে ননদের মোবাইলের ইমোতে বার্তা ও ছবি দিয়ে হত্যার কথা বলেন। এরপর মুক্তি সিএনজি নিয়ে হাটিকুমরুল পৌঁছেন। সেখান থেকে আবেদের সঙ্গে মাইক্রোবাসযোগে পালিয়ে যান। প

রে আবেদকে বিয়ে করে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার শুরু করেন। বড়াইগ্রাম থানায় মামলার পর বড়াইগ্রাম সার্কেলের এসএসপি হারুন অর রশিদ বিষয়টি আমাকে জানান। এরপর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ।

তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আমরা জানতে পারি আবেদ এবং মুক্তি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার দেবগ্রামে রয়েছেন। পরে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহায়তায় নাটোর পুলিশ দেবগ্রাম থেকে মুক্তি ও আবেদকে গ্রেফতার করে নাটোরে নিয়ে আসে।

গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে নাটোরের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন- নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন, বড়াইগ্রাম সার্কেলের এসএসপি হারুন অর রশিদসহ পুলিশের কর্মকর্তারা।

 

 

আরপি / এমবি



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top