রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১

মেসভাড়া মওকুফের দাবিতে যা বললেন জেলা প্রশাসক


প্রকাশিত:
২৯ এপ্রিল ২০২০ ২১:০৬

আপডেট:
২৯ এপ্রিল ২০২০ ২২:৩০

রাজশাহী জেলা প্রশাসক হমিদুল হক

রাজশাহীর মেসভাড়া মওকুফের দাবি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি গ্রুপ তৈরি করে। গতকালের তৈরি এ গ্রুপে সদস্য সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। তাদের দাবি, যেকোনভাবে যদি করোনা মহামারি এ পরিস্থিতিতে মেসভাড়া ও বাসাভাড়া মওকুফ করা হয়। রাজশাহী পোস্টের একটি প্রতিবেদন এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজশাহীর মেসভাড়া মওকুফের দাবি শিক্ষার্থীদের প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের জেরে ইতোমধ্যে ফেসবুক গ্রুপ সম্পর্কে রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ এবং ছাত্রলীগ নেতা রকি কুমার ঘোষ পৃথক পৃথক মন্তব্য করেছেন।

মেসভাড়া মওকুফের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক রাজশাহী পোস্টকে বলেন,‘ এটি এককভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। অনেক শিক্ষার্থী আছেন যাদের মেসভাড়া দেওয়া সমস্যা হবে। আবার গ্রামের অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান শহরে থাকেন। তাদের ক্ষেত্রে মেসভাড়া বা বাসাভাড়া দেওয়া সমস্যা নয়। করোনায় এমন বাড়িওয়ালাকে ত্রাণ দিয়েছি যারা দুইতালা বাড়ির একতালা ভাড়া দিয়ে সংসার চলতো।


আমি বলব, শিক্ষার্থীদের প্রতি মানবিকতার দিক থেকে অনেক মালিক বাড়িভাড়া কম করে নিতে পারেন। মালিক এবং বর্ডার উভয়ই মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখবেন, এটি তাদের সম্পর্কেও উপর নির্ভর করবে। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা তো আর কম নয়। সবার দিকে দেখাও মেসমালিকদের পক্ষে অসম্ভব। মেসমালিকদের তেমন কোন সংগঠনও নেই যে তাদের বলবো, আপনার মেসভাড়া মাফ করে দেন। বর্ডারের প্রতি মানবিক দিক থেকে মাফ করে দেওয়ার মতো হলে তারা যেন মাফ করে দেন।

তিনি আরোও বলেন, শিক্ষার্থীদের মেসভাড়া মওকুফের দাবি বিষয়ে সরকারী কোন নির্দেশনা আসেনি। যদি কোন নির্দেশনা আসে তাহলে অবশ্যই জানানো হবে’।

শিক্ষার্থীদের মেসভাড়া মওকুফের দাবি কতটা যৌক্তিক এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান রাজশাহী পোস্টকে বলেন,‘শিক্ষার্থীদের দাবি একবারেই ফেলে দেবার মতো নয়। আমার কলেজসহ রাজশাহীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক গরীব ছাত্র-ছাত্রীরা মেসে, বাড়িভাড়া নিয়ে থাকে। করোনায় তাদের বেশিরভাগেরই অর্থনৈতিক অবস্থা নাকাল হয়েছে। আবার অনেক বাড়ির মালিক আছেন যাদের বাড়িভাড়ার টাকা দিয়ে সংসার চলে। উভয়কেই দেখতে হবে। বাড়ির মালিকদের বলবো তারা যেন নিজ নিজ জায়গা থেকে কমবেশি করে বাড়িভাড়ার টাকা নেন। যেসব বাড়ির মালিক শিক্ষার্থীদের এ টাকা মাফ করে দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন তারা যেন মাফ করে দেন। আর এটা খুব মহৎ কাজই হবে’

অপরদিকে মেস মালিকদের সাথে কথা হয়েছে। মহানগরীর লিচুবাগান এলাকার মেসমালিক শিরিন আক্তার বলেন,‘ আমার স্বামী মারা গেছেন। মেসের ভাড়া তুলে ছেলেদের পড়ালেখার খরচ, সংসার চলে। গতমাসের ভাড়া কোন বর্ডারই দেননি। তারা বলছেন অবস্থা নাজেহাল। এখন আমিও আছি বিপদে। ভাড়া তো কিছু কিছুু নিতে হবে তাছাড়া উপায় নাই।’

এ বিষয়ে রাজশাহী মহনগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ শিক্ষাথীদের আশ্বস্ত করে বলেন, আমি আমার জায়গা থেকে আমি ও আমার সাধারণ সম্পাদক দুই জন মিলে আমাদের রাজশাহী বাসীর অভিভাবক মাননীয় মেয়র মহাদয় জননেতা এ,এইচ,এম খায়রুজ্জামান লিটন ভাই সহ আমাদের জেলা প্রশাসক মহাদয় ও পুলিশ কমিশনার মহাদয়ের কাছে গিয়ে আপনাদের বিষয়টি তুলে ধরবো এবং বাড়ি ভাড়া যেন মওকুফ করা যায় এই বিষয়ে তিনাদের কাছে সহযোগীতা চাইবো। আমার বিশ্বাস ভালো কিছু একটা ফল পাওয়া যাবে, আপনারা কেউ দয়া করে হতাশ হবেন না সবাই ধৈর্য্য ধরুন আমরা আছি সবর্দা আপনাদের পাশে। 

তবে এ পরিস্থিতির মধ্যেও ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মেস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, লম্বা সময় সবাই বাসায় থাকায় সেভাবে ভাড়া দিতে চাচ্ছে না। তবে মওকুফের বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হবে। অন্তত দুই পক্ষেরই সুবিধাজনক কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top